সংবিধান

পূর্বকথা

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সংবিধানই একটি মৌলিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। সংগঠন পরিচালনা, শৃঙ্খলাবিধান ও নীতিমালা সংরক্ষণে এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংবিধান এক পবিত্র আমানত। এর প্রতিটি দিক কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী আন্দোলনের ঐতিহ্যের আলোকে প্রণয়ন করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সকল কর্মতৎপরতা এ সংবিধানের ভিত্তিতেই পরিচালিত হয়। মৌলিক নীতিমালাকে অক্ষুণ্ণ রেখে পরিবেশ ও পরিস্থিতির দাবি অনুসারে এ সংবিধানে বিভিন্ন সময় কিছু কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। সংবিধানের বর্তমান এ সমন্বিত সংস্করণ সর্বশেষ সংশোধনীসহ প্রকাশিত হলো। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সংবিধানের আলোকে সংগঠনের যাবতীয় কাজ আঞ্জাম দেওয়ার তাওফিক দিন। আমিন। জাম দেয়ার তৌফিক দিন। আমীন!

ভূমিকা

যেহেতু আমরা
দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে—
এক : নিখিল বিশ্বের সৃষ্টি, এর স্থিতি, স্থায়িত্ব, সংরক্ষণ, ক্রমবিকাশ ও ক্রমোন্নতি একমাত্র সেই আল্লাহর দান, যিনি অসীম জ্ঞান ও বিচক্ষণতার অধিকারী। যাঁর ইচ্ছা ও আদেশ নিরঙ্কুশভাবে আসমান ও জমিনের প্রতিটি অণু-পরমাণুর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে; যাঁর হাতে রয়েছে জীবিকার চাবিকাঠি ও জীবন-মৃত্যুর বাগডোর এবং যিনি সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতার উৎস।
দুই : পৃথিবীর জীবনই মানব-জীবনের শেষ নয়; মৃত্যুর পর মানুষকে আখেরাতের অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে হবে। মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে তার পার্থিব জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ও কাজের হিসেব দিতে হবে। পার্থিব জীবনে কেবল আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী গোটা জীবন পরিচালিত করলেই আখেরাতের সাফল্য ও কৃতকার্যতা অর্জিত হতে পারে।
তিন : আল্লাহ যুগে যুগে মানবজাতির পথনির্দেশের জন্য নির্ভুল জ্ঞানসহ নবী ও রাসূলদের এ দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল সা. প্রদর্শিত জীবন-বিধানই মানবজাতির ‘সিরাতুল মুস্তাকিম’— সহজ ও নির্ভুল চলার পথ। বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা. সর্বশেষ নবী। তাঁর ওপর অবতীর্ণ ‘আল-কুরআন’ এবং তাঁর উপস্থাপিত জীবনাদর্শই গোটা মানবজাতিকে কিয়ামত পর্যন্ত সঠিক পথের সন্ধান দেবে।
চার : ইসলামের বিধানগুলোকে পূর্ণভাবে গ্রহণ করে নেওয়ার মধ্যেই রয়েছে মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ। যখনই কৃষ্টি-সভ্যতা ও সমাজব্যবস্থাকে ইসলামের মূলনীতি থেকে অপসারিত করে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, তখনই মানবতাকে অকল্যাণ ও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে; এবং ইসলামী জীবনবিধানের প্রতি উন্নাসিকতাই বর্তমান জগতের সমস্ত অশান্তির মূল কারণ এবং ইসলামী জীবনবিধানের অনুসরণই এ শোচনীয় অবস্থা দূর করার একমাত্র উপায়।

সেহেতু আমরা
ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের প্রচেষ্টায় তৎপর ছাত্রগণ নিজেদেরকে একটি সংগঠনে সংঘবদ্ধ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি যে—
এক : আল্লাহর আনুগত্য ও রাসূল সা.-এর অনুসরণই আমাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হবে। আমরা সকল প্রকার আনুগত্য ও দাসত্ব পরিত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর আনুগত্য ও দাসত্ব অবলম্বন করব। সর্বপ্রকার মত, পথ ও বিধান ত্যাগ করে একমাত্র রাসূল সা.-এর আদর্শ, জীবন ও পদাঙ্ক অনুসরণ করব। আমাদের এ আনুগত্য ও অনুসরণ জীবনের কোনো একটি বিভাগের জন্য হবে না; বরং জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে পরিব্যাপ্ত হবে।
দুই : আমরা আমাদের জীবনকে ইসলামের আলোকে উদ্ভাসিত করে তুলব এবং মানবসমাজকে আল্লাহর আনুগত্য ও রাসূল সা.-এর অনুসরণের দিকে ডাকব। আমাদের সংগ্রাম ও সার্বিক প্রচেষ্টা একমাত্র এ উদ্দেশ্যেই নিয়োজিত থাকবে, যেন পৃথিবীর বুকে আল্লাহর বাণী সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ করে; রাসূল সা.-এর প্রদর্শিত বিধান পৃথিবীর বুকে সঠিক অর্থে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মানবজাতি ইসলামের ভিত্তিতে তাদের সামগ্রিক জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। এবং
তিন : : ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের পদক্ষেপ হিসেবে আমরা বাংলাদেশে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সমস্ত শক্তি ও সামর্থ্য নিয়োজিত করব।

প্রথম অধ্যায়

নাম

ধারা-১ :এ সংগঠনের নাম ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ধারা-২ :এ সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে— আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল সা. প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী মানুষের সার্বিক জীবনের পুনর্বিন্যাস সাধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আল্লাহর সন্তোষ অর্জন।

কর্মসূচি

ধারা-৩ : এই সংগঠনের কর্মসূচি-

এক (দাওয়াত) : তরুণ ছাত্রসমাজের কাছে ইসলামের আহ্বান পৌঁছিয়ে তাদের মাঝে ইসলামী জ্ঞান অর্জন এবং বাস্তব জীবনে ইসলামের পূর্ণ অনুশীলনের দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করা।
দুই (সংগঠন) : যেসব ছাত্র ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিতে প্রস্তুত, তাদেরকে সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ করা।
তিন (প্রশিক্ষণ) : এ সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ ছাত্রদেরকে ইসলামী জ্ঞান প্রদান এবং আদর্শ চরিত্রবানরূপে গড়ে তুলে জাহেলিয়াতের সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী হিসেবে গড়ার কার্যকরী ব্যবস্থা করা।
চার (ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন ও ছাত্রসমস্যার সমাধান) : আদর্শ নাগরিক তৈরির উদ্দেশ্যে ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন সাধনের দাবিতে সংগ্রাম এবং ছাত্রসমাজের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান।
পাঁচ (ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ) : অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং সাংস্কৃতিক গোলামি থেকে মানবতার মুক্তির জন্য ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো।

দ্বিতীয় অধ্যায়

সদস্য

ধারা-৪ : একজন শিক্ষার্থী যদি সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে তাঁর জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করেন, এ সংগঠনের কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতির সাথে পূর্ণ ঐকমত্য পোষণ করেন ও তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন, এ সংগঠনের সংবিধানকে সম্পূর্ণরূপে মেনে চলেন, তাঁর জীবনে ইসলাম নির্ধারিত ফরজ ও ওয়াজিবসমূহ যথাযথভাবে পালন করেন, কবিরা গুনাহসমূহ থেকে দূরে থাকেন এবং সংগঠনের লক্ষ্য ও কর্মসূচির বিপরীত কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখেন, তাহলে তিনি এ সংগঠনের সদস্যপদ লাভ করতে পারেন।

ধারা-৫ :সদস্যপদ লাভে ইচ্ছুক কোনো শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সভাপতি থেকে নির্ধারিত ফরম সংগ্রহপূর্বক তা যথাযথভাবে পূরণ করে কার্যকরী পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত পন্থায় কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দেবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি তা মঞ্জুর করবেন এবং তাঁর সদস্য পদের শপথ নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। মঞ্জুর না করলে তার কারণ কার্যকরী পরিষদের কাছে ব্যাখ্যা করতে বাধ্য থাকবেন।

ধারা-৬ :কোনো সদস্য যদি সংবিধানের ৪ নম্বর ধারায় বর্ণিত বিষয়সমূহ আংশিক বা পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেন অথবা সদস্য হওয়াকালীন প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন অথবা সংগঠনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেন অথবা তাঁকে সংশোধনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংগঠনের কাজে অবহেলা করে চলেন, তাহলে কার্যকরী পরিষদ কর্তৃক গৃহীত পন্থায় তাঁর সদস্যপদ বাতিল করা হবে।

ধারা-৭ :যদি কোনো সদস্য তাঁর সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিতে চান তাহলে তাঁকে কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করতে হবে। কেন্দ্রীয় সভাপতি তাঁর পদত্যাগপত্র পাওয়ার সাথে সাথে তাঁর সদস্যপদ মুলতুবি হয়ে যাবে এবং কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুমোদনের পরপরই তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।

ধারা-৮ : কোনো সদস্যের ছাত্রজীবন সমাপ্ত হলে তাঁর পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুমোদনক্রমে তাঁর সদস্যপদের পরিসমাপ্তি ঘটবে। সাথী

ধারা-৯ : যদি কোনো শিক্ষার্থী সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন, এ সংগঠনের কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতির সাথে সচেতনভাবে একমত হন, ইসলামের প্রাথমিক দায়িত্বসমূহ পালন করেন এবং সংগঠনের সামগ্রিক তৎপরতায় পূর্ণভাবে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতি দেন, তাহলে তিনি এ সংগঠনের সাথী হতে পারেন।

ধারা-১০ :সাথী হতে ইচ্ছুক কোনো শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সংগঠন কর্তৃক নির্ধারিত সাথী হওয়ার আবেদনপত্র পূরণ করে তা কেন্দ্রীয় সভাপতি অথবা তাঁর কোনো স্থানীয় প্রতিনিধির কাছে জমা দেবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি বা তাঁর স্থানীয় প্রতিনিধি সে আবেদনপত্র মঞ্জুর করে নেবেন এবং শপথের ব্যবস্থা করবেন।

ধারা-১১ :যদি কোনো সাথী সংবিধানের ৯ নম্বর ধারায় বর্ণিত নিয়মসমূহ আংশিক বা পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেন, তাহলে কেন্দ্রীয় সভাপতি বা তাঁর স্থানীয় প্রতিনিধি উক্ত সাথীর সাথীপদ বাতিল করতে পারবেন।

তৃতীয় অধ্যায়

কেন্দ্রীয় সংগঠন

ধারা-১২ : কেন্দ্রীয় সভাপতি, কার্যকরী পরিষদ এবং সেক্রেটারিয়েটের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠন গঠিত হবে।

কেন্দ্রীয় সভাপতি

ধারা-১৩ :এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সংগঠনের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে এক বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন।

ধারা-১৪ : যদি কোনো কারণবশত কেন্দ্রীয় সভাপতির পদ স্থায়ীভাবে শূন্য হয় তাহলে কার্যকরী পরিষদ, পরিষদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত করে যথাশীঘ্র সম্ভব সদস্যদের ভোটে সেশনের অবশিষ্ট সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। যদি কেন্দ্রীয় সভাপতি সাময়িকভাবে ছুটি গ্রহণে বাধ্য হন তাহলে তিনি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে পরিষদের মধ্য থেকে তিন মাসের জন্য অস্থায়ী সভাপতি নিযুক্ত করতে পারবেন।

ধারা-১৫ : কেন্দ্রীয় সভাপতি বা অস্থায়ী সভাপতি নির্বাচিত বা নিযুক্ত হওয়ার পর কার্যভার গ্রহণের পূর্বে সদস্যদের সম্মেলনে অথবা কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে সংবিধানের পরিশিষ্টে বর্ণিত সভাপতির শপথ গ্রহণ করবেন।

ধারা-১৬ : কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে— এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হাসিল, পরিচালনা, কর্মসূচির বাস্তবায়ন এবং সর্বোৎকৃষ্ট সাংগঠনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ।

ধারা-১৭ : কেন্দ্রীয় সভাপতি সবসময় কার্যকরী পরিষদের পরামর্শ অনুসারে কাজ করবেন। কিন্তু দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন ও কার্যকরী পরিষদের সিদ্ধান্ত নেই এমন কোনো বিষয়ে জরুরি ও সাময়িক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হলে তিনি এ নিয়মের অধীন থাকবেন না।

ধারা-১৮ : সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় কেন্দ্রীয় সভাপতিকে যেসব ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, তিনি নিজে অথবা কর্মীদের মাধ্যমে সেগুলো প্রয়োগ করতে পারবেন।

কার্যকরী পরিষদ

ধারা-১৯ : কার্যকরী পরিষদের সমাপনী সাধারণ অধিবেশন কর্তৃক নির্ধারিত হারে সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে কার্যকরী পরিষদ এক বছরের জন্য গঠিত হবে। সভাপতি প্রয়োজনবোধ করলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি হবে না এমন সংখ্যক সদস্যকে এবং কার্যকরী পরিষদের প্রাক্তন সদস্যদের মধ্য থেকে অনূর্ধ্ব দুজনকে কার্যকরী পরিষদের পরামর্শক্রমে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সভাপতি থাকবেন এবং সেক্রেটারি জেনারেল পদাধিকার বলে কার্যকরী পরিষদের সদস্য হবেন।

ধারা-২০ : কার্যকরী পরিষদের সদস্যগণ কেন্দ্রীয় সভাপতির ব্যবস্থাপনায় শপথ গ্রহণ করবেন।

ধারা-২১ : কার্যকরী পরিষদের কোনো নির্বাচিত সদস্যের পদ শূন্য হলে তিন মাসের মধ্যেই তা পূরণ করতে হবে।

ধারা-২২ : সামগ্রিকভাবে কার্যকরী পরিষদের ও ব্যক্তিগতভাবে এর সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের তত্ত্বাবধান, কেন্দ্রীয় সভাপতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনে ইসলামী নীতির অনুসৃতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনের কর্মসূচি বাস্তবায়নের তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণ, সংবিধান অনুসৃতির তত্ত্বাবধান, সংগঠনের যেকোনো ত্রুটি দূরীকরণ, সংগঠনের সামগ্রিক কাজের মৌলিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, কেন্দ্রীয় সভাপতিকে পরামর্শ দান, নিঃসঙ্কোচে মতপ্রকাশ এবং কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে নিয়মিত যোগদান অথবা অভিমত প্রেরণ।

ধারা-২৩ :বছরে কার্যকরী পরিষদের তিনটি সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রয়োজনবোধ করলে অথবা কার্যকরী পরিষদের এক-পঞ্চমাংশ সদস্য অথবা সংগঠনের সদস্যদের এক-দশমাংশ কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে লিখিতভাবে দাবি করলে কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে। কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠানের দাবি পেশ করার দিন থেকে এক মাসের মধ্যেই অধিবেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ধারা-২৪ : কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত হলেই কোরাম হবে। কিন্তু কোরাম না হওয়ার কারণে কোনো অধিবেশন মুলতুবি হলে পরবর্তী অধিবেশনের জন্য কোরামের প্রয়োজন হবে না। কার্যকরী পরিষদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত উপস্থিত সদস্যদের অধিকাংশের মতানুযায়ী গৃহীত হবে।

ধারা-২৫ : যদি কোনো ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কার্যকরী পরিষদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় এবং যদি একে অপরের রায় মেনে নিতে না পারেন, তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংগঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতানুযায়ী নির্ধারিত হবে।

সেক্রেটারিয়েট

ধারা-২৬ : কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিভাগীয় সেক্রেটারির সমন্বয়ে সেক্রেটারিয়েট গঠন করবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনবোধে পূর্ণ বা আংশিকভাবে তাঁর সেক্রেটারিয়েটে রদবদল করতে পারবেন।

ধারা-২৭ : সেক্রেটারি জেনারেলের সেক্রেটারিয়েটের বিভাগগুলোর কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব থাকবে। অধস্তন সংগঠনগুলোর ও কর্মীদের ওপর দৃষ্টি রাখা এবং কেন্দ্রীয় সভাপতিকে সমস্ত বিষয়ে ওয়াকিবহাল রাখা তাঁর দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হবে।

ধারা-২৮ : কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করাই সেক্রেটারিয়েটের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং সেক্রেটারিয়েট কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে দায়ী থাকবে।

অন্যান্য স্তুর

ধারা-২৯ : : প্রয়োজন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের পরামর্শক্রমে সংগঠনের অন্যান্য স্তর উদ্ভাবন ও বিলোপ সাধন এবং প্রশাসন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারবেন।

শাখা সংগঠন

ধারা-৩০ : কার্যকরী পরিষদ অনুমোদিত পন্থায় কেন্দ্রীয় সভাপতি সদস্য শাখা, সাথী শাখা ও জেলা শাখা গঠন করতে পারবেন।

ধারা-৩১ : সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে সদস্য শাখার সভাপতি এবং সদস্য ও সাথীদের প্রত্যক্ষ ভোটে সাথী শাখার সভাপতি এক বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। কার্যকরী পরিষদ এক বছরের জন্য জেলা শাখার সভাপতি মনোনয়ন দেবেন। অনিবার্য কারণে কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশে বছরের যেকোনো সময়ে শাখা সভাপতি নির্বাচন বা মনোনয়ন সম্পন্ন হতে পারবে।

ধারা-৩২ : কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার ভিত্তিতে সংগঠনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশাবলি পালনই শাখা সংগঠনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

নির্বাচন

ধারা-৩৩ : নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও দুইজন সহকারী নির্বাচন কমিশনারের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সংগঠনের সব পর্যায়ের নির্বাচন পদ্ধতি কার্যকরী পরিষদ নির্ধারণ করবেন।

ধারা-৩৪ : এ সংগঠনের সভাপতি বা কার্যকরী পরিষদের সদস্য বা অন্য কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি নির্বাচন করা কালে ব্যক্তির আল্লাহ ও রাসূল সা.-এর প্রতি আনুগত্য, তাকওয়া, আদর্শের সঠিক জ্ঞানের পরিসর, সাংগঠনিক প্রজ্ঞা, শৃঙ্খলাবিধানের যোগ্যতা, মানসিক ভারসাম্য, উদ্ভাবনী ও বিশ্লেষণী শক্তি, কর্মের দৃঢ়তা, অনড় মনোবল, আমানতদারিতা এবং পদের প্রতি লোভহীনতার দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।

ধারা-৩৫ :: এ সংগঠনের যেকোনো নির্বাচনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ক্যানভাসের অনুমতি থাকবে না। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো গ্রুপ সৃষ্টি করা যাবে না। তবে পরামর্শ নেওয়াটা ক্যানভাসের অন্তর্ভুক্ত হবে না। নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তিই নির্বাচিত বলে ঘোষিত হবেন।

অর্থ-ব্যবস্থা

ধারা-৩৬ : সংগঠনের প্রত্যেক স্তরে বায়তুলমাল থাকবে। কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের দান, সংগঠন-প্রকাশনীর মুনাফা এবং শরীয়ত অনুমোদিত অন্যান্য খাতসমূহ থেকে প্রাপ্ত অর্থই হবে বায়তুলমালের আয়ের উৎস।

ধারা-৩৭ : সংশ্লিষ্ট সভাপতি সংগঠনের কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও অন্যান্য সাংগঠনিক কাজে বায়তুলমালের অর্থ ব্যয় করবেন।

ধারা-৩৮ : বায়তুলমালের জন্য শরীয়ত অনুমোদিত অন্যান্য খাতসমূহ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে হলে আগেই কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুমতি নিতে হবে এবং এ খাতসমূহ থেকে প্রাপ্ত অর্থের হিসেব পৃথক রাখতে হবে। এ অর্থ শুধু শরীয়ত নির্ধারিত খাতসমূহে ব্যয় করা যাবে।

ধারা-৩৯ : অধস্তন সংগঠনগুলো বায়তুলমাল থেকে নিয়মিতভাবে নির্ধারিত অংশ ঊর্ধ্বতন সংগঠনের বায়তুলমালে জমা দেবে।

ধারা-৪০ :কেন্দ্রীয় সভাপতি সামগ্রিকভাবে বায়তুলমালের আয়-ব্যয় সম্পর্কে কার্যকরী পরিষদের কাছে দায়ী থাকবেন এবং অধস্তন সংগঠনগুলোর বায়তুলমালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সাথে পরামর্শ করে অডিট কমিটি গঠন করবেন। অডিট কমিটি বছরে অন্তত একবার কেন্দ্রীয় ও শাখা বায়তুলমাল অডিট করবে। অডিট রিপোর্ট কার্যকরী পরিষদে পেশ করা হবে।

পদচ্যুতি ও রদকরণ

ধারা-৪১ : কেন্দ্রীয় সভাপতি যদি স্বেচ্ছায় শরীয়তের স্পষ্ট বিধান লঙ্ঘন করেন অথবা তাঁর কার্যক্রমে সংগঠনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, তাহলে তাঁকে পদচ্যুত করা যাবে।

ধারা-৪২ : যদি কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশ সদস্য কেন্দ্রীয় সভাপতির প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব পাশ করেন, তাহলে এক মাসের মধ্যে পূর্ণ বিষয়টি সদস্যদের নিকট পেশ করতে হবে। অধিকাংশ সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে কেন্দ্রীয় সভাপতি পদচ্যুত হবেন। অধিকাংশ সদস্য সভাপতির সমর্থনে ভোট দিলে কার্যকরী পরিষদ পদচ্যুত হবেন এবং নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ধারা-৪৩ : সদস্যদের মধ্য থেকে কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করতে হলে এ প্রস্তাবের পক্ষে প্রমাণাদিসহ সদস্যদের এক-দশমাংশের স্বাক্ষর নিয়ে লিখিতভাবে কার্যকরী পরিষদের কাছে তা পেশ করতে হবে। এর পরে অনাস্থা প্রস্তাবটি এক মাসের মধ্যে কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে পেশ করতে হবে। কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশ সদস্য কেন্দ্রীয় সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবটি পাস করলে এক মাসের মধ্যেই পূর্ণ বিষয়টি সদস্যদের কাছে পেশ করতে হবে। অধিকাংশ সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে কেন্দ্রীয় সভাপতি পদচ্যুত হবেন। অধিকাংশ সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিলে কার্যকরী পরিষদ পদচ্যুত হবেন এবং নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ধারা-৪৪ : যদি কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের অথবা কার্যকরী পরিষদের কোনো নির্বাচিত সদস্যের রদবদল করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন, তাহলে তিনি সংগঠনের সদস্যদের মতামত গ্রহণ করবেন। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তাঁর মতের পক্ষে রায় দেন, তাহলে উক্ত নির্বাচিত সদস্য অথবা কার্যকরী পরিষদ পদচ্যুত হবেন। কিন্তু যদি কার্যকরী পরিষদের সমষ্টিগত পদচ্যুতির ব্যাপারে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কেন্দ্রীয় সভাপতির মতের বিরোধিতা করেন, তাহলে এক মাসের মধ্যে কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করে কেন্দ্রীয় সভাপতি অবশ্যই পদত্যাগপত্র দাখিল করবেন।

ধারা-৪৫ : কার্যকরী পরিষদের কোনো সদস্য তখনই তাঁর সদস্যপদ হারাবেন, যখন তিনি সংগঠনের সদস্য না থাকেন অথবা উপযুক্ত কারণ ব্যতীত কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে পর পর দুবার অনুপস্থিত থাকেন অথবা কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং সভাপতি তা মঞ্জুর করেন অথবা যারা তাঁকে নির্বাচিত বা মনোনীত করেছেন, তাদের অধিকাংশ যদি তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেন।

ধারা-৪৬ :কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রয়োজনবোধে যে কোন সাথী শাখাকে ভেঙ্গে দিতে এবং যে কোন সদস্য শাখাকে সাসপেন্ড করতে পারবেন। কিন্তু কোন সদস্য শাখাকে সম্পূর্ণ ভেঙ্গে দিতে হলে তাকে কার্যকরী পরিষদের পরামর্শ নিতে হবে।

সংবিধানের সংশোধন

ধারা-৪৭ : : এ সংবিধানের কোনো সংশোধনী সদস্যদের সম্মেলনে সকল সদস্যের অধিকাংশের ভোটে মঞ্জুর করা যাবে। কিন্তু উক্ত সংশোধনীর নোটিশ সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় সভাপতির নিকট পৌঁছাতে হবে। এ সংবিধানের কোনো সংশোধনী কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশের ভোটেও মঞ্জুর করা যাবে। কিন্তু এরূপ কোনো সংশোধনী গৃহীত হওয়ার দুই মাসের মধ্যেই সকল সদস্যের অধিকাংশের ভোটে তা মঞ্জুর করে নিতে হবে।

ধারা-৪৮ : এ সংবিধানের কোনো ধারা বা বিষয়ের ব্যাখ্যার ব্যাপারে কার্যকরী পরিষদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।

বিবিধ

ধারা-৪৯ : জানুয়ারি মাস থেকে এ সংগঠনের সাংগঠনিক বছর শুরু হবে।

ধারা-৫০ : এ সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট যেসব ছাত্রের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হয়ে যাবে, তাদেরকে নিয়ে এ সংগঠনের একটি ভ্রাতৃশিবির গঠিত হবে।

পরিশিষ্ট

সাথীর শপথ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আমি ………………যাকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনকে সাক্ষী করে ওয়াদা করছি যে- আমি .............................. যাকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনকে সাক্ষী করে ওয়াদা করছি যে, (১) আমি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শ, লক্ষ্য, কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতির সাথে সম্পূর্ণরূপে একমত। এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাতে আমি সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতা করব।
(২) আমি ইসলামের মৌলিক বিধি-বিধানসমূহ যথাযথভাবে পালন করব এবং
(৩) আমার ওপর অর্পিত আমানত যথাযথভাবে রক্ষা করব।
আল্লাহ আমাকে এ ওয়াদা পালন করার তাওফিক দিন। আমিন।

স্বাক্ষর-

সদস্যদের শপথ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
‘আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া-আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মদ সা. তাঁর বান্দা ও রাসূল)।
আমি ............................ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য হয়ে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনকে সাক্ষী করে ওয়াদা করছি যে,
(১) আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা.-এর নির্দেশিত আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী জীবন গঠন করে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন করাই হবে আমার জীবনের মূল লক্ষ্য এবং এ লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার সংকল্প নিয়ে আমি নিছক আল্লাহর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য হচ্ছি।
(২) আমি শিবিরের কর্মনীতি ও কর্মসূচি পুরোপুরি সমর্থন করি।
(৩) আমি শিবিরের সংবিধান অনুযায়ী শিবিরের নিয়ম-কানুন পালন করব।
আমি আরও ওয়াদা করছি যে, আমার সাধ্যানুযায়ী-
(৪) আমি সমস্ত ব্যাপারে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাধারা এবং কার্যক্রমকে কুরআন ও সুন্নাহর ছাঁচে ঢেলে গঠন করার চেষ্টা করব এবং নিজের জীবনের উদ্দেশ্য, পছন্দ-অপছন্দের মাপকাঠি ও আনুগত্যের কেন্দ্র পরিবর্তন করে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অনুকূলে গড়ে তোলার চেষ্টা করব।
(৫) আমি জ্ঞানার্জন এবং শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতার বিকাশ সাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাব।
(৬) আমি ছাত্রদের কাছে শিবিরের আহ্বান পৌঁছাতে এবং যারা তা গ্রহণ করে তাদেরকে শিবিরের পতাকাতলে সংঘবদ্ধ করতে চেষ্টা করব।
(৭) আমি আমার ওপর অর্পিত আমানত যথাযথভাবে রক্ষা করব।
(নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক)। আল্লাহ আমাকে এ ওয়াদা পালন করার তাওফিক দিন। আমিন।

স্বাক্ষর-

সভাপতির শপথ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আমি .............................. বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির .................... এর সভাপতি নিযুক্ত হয়েছি। আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনকে সাক্ষী রেখে ওয়াদা করছি যে,
(১) আমি শিবিরের মূল উদ্দেশ্য হাসিল ও কর্মসূচির পরিপূর্ণতা বিধানকেই আমার সর্বপ্রধান কর্তব্য বলে মনে করব।
(২) নিজে শিবিরের সংবিধান মেনে চলব এবং এর ভিত্তিতে শিবিরের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে, সুষ্ঠু নিয়ম-পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করতে ও চালাতে এবং এর সংরক্ষণ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
আল্লাহ আমাকে এ ওয়াদা পালন করার তাওফিক দিন। আমিন।

স্বাক্ষর-

কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের শপথ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আমি……………….যাকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যকরী পরিষদের সদস্য করা হয়েছে, আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনকে সাক্ষী করে ওয়াদা করছি যে- আমি ......... যাকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যকরী পরিষদের সদস্য করা হয়েছে, আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনকে সাক্ষী করে ওয়াদা করছি যে
(১) আমি শিবিরের শৃঙ্খলা বিধান ও এর কার্যাবলির পূর্ণ তত্ত্বাবধান এবং সেখানে যদি কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় তাহলে তা দূর করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
(২) শিবিরের সংবিধান এবং কার্যকরী পরিষদের বিধি-বিধানের পূর্ণ অনুগত থাকব।
(৩) নিজের অভিমত দ্বিধাহীন চিত্তে প্রকাশ করব।
(৪) কোনো শরয়ী ওজর-আপত্তি ব্যতিরেকে পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত হতে অথবা অভিমত প্রেরণ করতে কোনো ত্রুটি করব না। আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন আমাকে এ ওয়াদা পালনের ক্ষমতা দিন। আমিন।

স্বাক্ষর-

— সমাপ্ত —